August এর ১ এবং ২ তারিখ ছিল Kongju ভ্রমণ। Kongju হচ্ছে কোরিয়ার দক্ষিণ দিকের Chungcheongnam-do povince, এর একটা city। এক সময় কোরিয়ার Prime Minister Lee Hae- Chan ঘোষণা দিয়েছিল যে, কোরিয়ার capital seoul থেকে Kongju তে চলে যাবে। যাই হোক পরে আর সেটা আর করা হয় নি। লুনার কিছু কোরিয়ান বন্ধু আমাদেরকে আমন্ত্রন জানিয়েছিল। মহিলা (নারগিস), যাওয়ার কথা থাকলেও ল্যাব থাকায় আমাদের সাথে যেতে পারে নি। আগে বলেনি, কেন নারগিসকে মহিলা বলা হয়। একদিন যখন আমরা কিছু বাংলাদেশী মিলে গল্প করছিলাম, তখন, নারগিস কথার ফাঁকে বলে বসল, আমি মহিলা মানুষ। তারপর থেকেই নারগিসকে মহিলা বলে সম্বোধন করা হয়ে থাকে। নারগিস এতে কোন রাগ করে থাকেনা।যাইহোক, ১ তারিখে আমাকে খুব সকালে ঊঠতে হয়েছিল, যেহেতু আমাদের ট্রেন ছিল সকাল ৯ টার দিকে। ঐদিন রাত্রে আর আমার ঘুম আসে নি। আমার এই একটা খারাপ অভ্যাস , কোনদিন সকালে উঠা লাগলে আমি আর রাত্রে ঘুমাতে পারি না। যাই হোক রাত্রে এলার্ম দিয়ে ঘুমাতে, ঊঠতে কোন সমস্যা হয় নি। আমি আর লুনা সকাল ৮ টার দিকে আমাদের হেয় ওয়া ষ্টেশন থেকে সাবওয়েতে করে কসক টার্মিনাল এ চলে গেলাম। তারপর ৯ টার KTX ট্রেনে করে আঞ্চানের দিকে রওনা হ্লাম। সেখানে আবার লুনার বন্ধুরা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। এটা ছিল কোরিয়াতে প্রথম আমার KTX ট্রেনেতে চড়া। যাই হোক, আমি বারবার লক্ষ্য করছিলাম, ট্রেনটি কত কি মি গতিতে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে ৩০ মিনিটের মধ্যে আমরা আঞ্চানে পৌঁছে গেলাম। ট্রেন থেকে নামেতে না নামতেই লুনার বন্ধু ও তার boy friend এসে হাজির। লুনার বন্ধু আবার কিছুটা বাংলা কথা বলতে পারে। আমি তাই তার সাথে যত সম্ভব বাংলায় কথা বলার চেষ্টা করলাম। ওরা গাড়ি নিয়ে এসেছিল, তাই মজা করে গাড়িতে চড়ে বসলাম। আমরা তারপর Kongju এর দিকে রওনা দিলাম। kongju তে যাবার পথে আমরা কাছেই Gapsa নামে একটা Temple এ কিছুক্ষণের জন্য থামলাম। কোরিয়ার বেশিরভাগ temple-ই হচ্ছে পাহাড়ের উপরে। এই ঠাডা -পড়া রোদের মধ্যে ইচ্ছা না থাকা সত্তেও পাহাড়ে উঠা লাগলো। উপড়ে উঠার পর মনে হলো যে, না উঠলে আসলেই এতও সুন্দর একটা দৃশ্য আর একটা সুন্দর temple দেখা হতে বঞ্ছিত হতাম। যাই হোক, temple দেখার পরে আমরা আবার kongju এর দিকে রওনা হলাম। দুপুর ২টার দিকে আমরা আমাদের ভাড়া করা পেনশনে হাজির।
লুনার বন্ধুই সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল। আমরা হচ্ছে শুধুমাত্র অতিথী। খিদায় আমার মরে যাবার অবস্থা, এমনিতেই সকালে তেমন কিছু খেয়ে আসি নি। কিন্তু কারো চোখে মুখে দুপরের খাবার কোন আভা খুজে পেলাম না। শেষ পর্যন্ত লজ্জা পরিহার করে বলে বসলাম, কেমন হয় রামিয়ন রানলে। এমনিই লুনাকে আমি বারবার বলতে ছিলাম খাবারের কথা। শেষে লুনা রাজি হল রানতে। ১০ মিনিটের মধ্যেই রামিয়ন রান্না শেষ হয়ে গেল। আমার দৃষ্টি ছিল, কখন রান্না শেষ হবে। রান্না শেষ না হতে হতেই আমি ভদ্রভাবে রামিয়নের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লাম। খাবারের পরে আমার মনে হলো আমি যেন আমার প্রাণ ফিরে পেলাম।
খাবারের পরে আমি একটা হালকা ঘুম দিয়ে নিলাম। আসলে ঘুম না, just rest. ..... সবাই এই গরমের মধ্যে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। এর মধ্যে বেশ আরও ৩ থেকে ৪ টা group এসে হাজির আমাদের cottage -এ। তারা সবাই বেস্ত হয়ে গেল রান্না বান্নার কাজে। সবার-ই মোটামুটি BBQ এর preparation আছে, দেখে মনে হল। তাদের preparation দেখে আমার আবার পেটে খিদা জেগে উঠল। আমি অপেক্ষা করছিলাম, কখন আমরা শুরু করব। আমি যেহেতু guest, তাই লজ্জায় কিছু বলতেও পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত আমরা আমদের BBQ এর preparation নেয়া শুরু করলাম। তখন already রাত সাড়ে ৮ টা। যাই হোক বেশিক্ষণ লাগল না, আমাদের BBQ এর preparation নিতে। তারা আমদের জন্য গরুর মাংসের ব্যবস্থা করেছিল। গরুর মাংস কোরিয়াতে আসলে -ই দাম অনেক। যাই হোক আমি আমার guitar নিয়ে বসলাম।
মনের আনন্দে গলা ছেড়ে গান ধরলাম। আমাদের cottage টা ছিল, একটা গ্রামের মধ্যে। আশেপাশে শুধু ক্ষেতের জমি। অনেক দিন পর এরকম পরিবেশের সংষ্পর্শে আসতে পেরে খুবই ভাল লাগল। লুনাকে এজন্য ধন্যবাদ দিতে ভুল করলাম না।
আমাদের BBQ party -র শেষে সবাই ক্লান্ত হয়ে পরেছিল। তাই সবাই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে চলে গেলাম। তারপর দিন সকাল ৮ টার দিকে ঘুম ভাংলো মশার কামড়ে। সকালে উঠেই আবার রামিয়ন খেলাম পেট ভরে। সকাল ১১ টার মধ্যেই সব গুছিয়ে আমরা আঞ্চানের দিকে রওনা হলাম, যেখান থেকে আমদেরকে বাস ধরতে হবে। আঞ্চানের যাবার পথে আমরা আমদের দুপুরের ভোজটা সেরে নিলাম একটা খুব ভাল restaurant-এ। লুনার বন্ধুই bill টা দিল। যাই হোক এতে আমার কোন আপত্তি ছিল না, যেহেতু, আমার pocket এর অবস্থা ভাল ছিল না। আমাদের seoul ফেরার ট্রেন ছিল বিকাল ৫ টায়।
আমাদের হাতে তখনও ২ ঘন্টার মতো সময় ছিল, তাই এই ফাঁকে আমরা আংগুরের বাগানে একটু ঘুরে আসলাম। বেশ মজা করে কিছু আংগুরও খেয়ে নিলাম এই সুযোগে। তারপর আমরা ৫ টা বাজঁতে ১০ মিনিট আগে আঞ্চান ষ্টেশনে এসে পৌঁছলাম। লুনার বন্ধুদের শেষ বিদায় শুভেচ্ছা জানিয়ে আমরা চললাম Seoul এর দিকে, সেই যান্ত্রিক জীবনের দিকে..................।
No comments:
Post a Comment